1. info@asiabarta.news : এশিয়া বার্তা :
ফরিদপুরের জেলাপ্রশাসক ও ইউ এন ও কে এমপি মুজিবুর রহমান চৌধুরী নিক্সনের হুঁশিয়ারি"" - এশিয়া বার্তা
বুধবার, ০৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৩:৩৫ পূর্বাহ্ন
ঘোষণা:
জরুরী নিয়োগ চলছে দেশের প্রতিটি বিভাগীয় প্রতিনিধি, জেলা,উপজেলা, স্টাফ রিপোর্টার, বিশেষ প্রতিনিধি,নিয়োগ চলছে। আগ্রহীরা যোগাযোগ করুন: বার্তা বিভাগ-০১৭১৬৫৫৯১৯০

ফরিদপুরের জেলাপ্রশাসক ও ইউ এন ও কে এমপি মুজিবুর রহমান চৌধুরী নিক্সনের হুঁশিয়ারি””

  • প্রকাশিত: সোমবার, ১২ অক্টোবর, ২০২০
  • ২২৮ বার পড়া হয়েছে

মোঃ সাদ্দাম হোসেন সোহান,ফরিদপুর ঃ ফরিদপুরের জেলা প্রশাসককে (ডিসি) হুঁশিয়ার করে দিয়েছেন সংসদ সদস্য (এমপি) মুজিবর রহমান চৌধুরী নিক্সন । ডিসির উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আমি যদি নেতাকর্মীদের নিয়ে নামি, তবে আপনি এক মিনিট দম নেওয়ার সুযোগ পাবেন না।’ শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে চরভদ্রাসন উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের সামনে এক সমাবেশে ফরিদপুর-৪ আসনের এমপি নিক্সন চৌধুরী এ হুঁশিয়ারি দেন। চরভদ্রাসন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে উপনির্বাচনে নিজেদের প্রার্থীর বিজয় উপলক্ষে এ সমাবেশের আয়োজন করা হয়।
নিক্সন চৌধুরী বলেন, ‘প্রশাসনের মধ্যে লুকাইয়া থাকা ওই জেলা প্রশাসক শেখ হাসিনার চোখকে ফাঁকি দিয়ে ১২ জন ম্যাজিস্ট্রেট দিয়ে নৌকার কর্মীদের অ্যারেস্ট করছে, পিটাইছে ওই জেলা প্রশাসক।’ ‘জেলা প্রশাসক একজন রাজাকার’ মন্তব্য করে এ সংসদ সদস্য বলেন, ‘মাত্র চারটি ইউনিয়নে ১২ জন ম্যাজিস্ট্রট দিয়ে যেখানে পাইছে সেখানে আমার নেতাকর্মীদের ওপর হামলা করা হয়েছে।’ নিক্সন চৌধুরী বলেন, ‘আমি জেলা প্রশাসককে সাবধান করব, আপনি ফরিদপুরে দেখেছেন অনেক বড় নেতার পতন হইছে, ওই বরকত-রুবেলের যত অন্যায়, যত দুর্নীতি তার সঙ্গে আপনার জেলা প্রশাসনের লোক জড়িত ছিল। বরকত-রুবেলের বিচার হলে ওই জেলা প্রশাসকের বিচার হবে। কারণ ওই দিপু খাঁর (প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী কেএম ওবায়দুল বারী) বালুর ব্যবসার ভাগ ওই জেলা প্রশাসক পায়।’

‘জেলা প্রশাসকের উদ্দেশে বলব, আপনি যত বড় উপদেষ্টার নাতি হোন না কেন, আপনি নিক্সন চৌধুরীর সঙ্গে চোখ রাঙাইয়া কথা বলবেন না। আমি যদি আমার জনগণ নিয়া আপনার বিরুদ্ধে আন্দোলনে নামি, আপনি নৌকার বিরুদ্ধে কাজ করেছেন, আপনি আমার নেতাকর্মীদের অ্যারেস্ট করেছেন। আমি যদি নেতাকর্মীদের নিয়ে নামি, তবে আপনি এক মিনিট দম নেওয়ার সুযোগ পাবেন না।’ বক্তব্যের এ পর্যায়ে সমাবেশে জেলা প্রশাসকের বিরুদ্ধে স্লোগান দিতে শুরু করেন সংসদ সদস্যের অনুসারীরা।

এমপি আরও বলেন, ‘সরকারি চাকরি করেন বিএনপি নেতাদের চেয়ারম্যান বানানোর জন্য না। এই যুবদলের প্রেসিডেন্ট দিপু খাঁর বালুর ব্যবসা থেকে কোটি কোটি টাকা এই ডিসি ঘুষ নিচ্ছে দেখেই আজ এ অবস্থা। আমরা এর বিচার অবশ্যই করব এবং আমরা এর বিচার চাই।’ গত শনিবার চরভদ্রাসন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এ নির্বাচনে সাত প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। নির্বাচনের আগে দুই প্রার্থী সরে দাঁড়ান।

নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. কাওসার হোসেন (নৌকা) ১৬ হাজার ৫২৮ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্ব্বী উপজেলার হরিরামপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান কেএম ওবায়দুল বারী পান পাঁচ হাজার ৩৪৬ ভোট।

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, ৬ অক্টোবর জেলা প্রশাসকের কাছে একটি আবেদন পাঠান চরভদ্রসন উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা। ‘চরভদ্রাসন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে উপনির্বাচন ২০২০ উপলক্ষে এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ প্রসঙ্গে’ শিরোনামের আবেদনে সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে নির্বাচন পরিচালনা এবং আচরণবিধি প্রতিপালন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষার জন্য চারজনসহ মোট ১২ জন এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অনুরোধ জানান। পরে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ১২ জন এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ দেওয়া হয়।

এদিকে শনিবার ভোট গ্রহণ চলাকালে মোবাইল ফোনে নিক্সন চৌধুরী ও চরভদ্রাসন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জেসমিন সুলতানার কথোপকথনের একটি অডিও ভাইরাল হয়। এতে এমপিকে বলতে শোনা যায়, ‘আপনার এসিল্যান্ড-ভাঙ্গা আমার লোককে গাড়িতে তুলে নিছে। ওরে দালালি করতে মানা করেন।’ তারপর গালাগাল করতে শোনা যায়। এরপর বলেন, ‘সিগারেট খাওয়ার জন্য ওকে ধরছে, আপনি ওকে ছাড়তে বলেন। আমি আসতাছি চরভদ্রাসন, পাঁচ মিনিট সময় দিলাম এর মধ্যে ছেড়ে না দিলে উপজেলা ঘেরাও করব আমি।’

চরভদ্রাসন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জেসমিন সুলতানা ফোনালাপের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘বুথের ভেতর সিগারেট খাওয়া ও জাল ভোট দেওয়ার চেষ্টা করায় এমপির লোককে আটক করা হয়। তিনি ফোনে আমাকে হুমকি-ধমকি দিলে আটককৃতকে ছেড়ে দেওয়া হয়।’

ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক অতুল সরকার বলেন, নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে আয়োজনের জন্য নির্বাচন কমিশনের চাহিদা অনুযায়ী ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। বেশি ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ দেওয়া হলে নির্বাচনে কী সমস্যা হয় তা বোধগম্য নয়।

সংসদ সদস্যের হুঁশিয়ারির বিষয়ে জেলা প্রশাসক বলেন, বিষয়টি তিনি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছেন।

জেলা প্রশাসনের ক্ষোভ: এদিকে এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস অ্যাসোসিশেন ফরিদপুর জেলা শাখার উদ্যোগে রোববার দুপুরে জরুরি সভার আয়োজন করা হয়। ফরিদপুরের ডিসি অতুল সরকারের সভাপতিত্বে সভায় বলা হয়, জেলা প্রশাসক ও ম্যাজিস্ট্রেটদের বিরুদ্ধে মানহানিকর ও অশোভন উক্তি সরকারের সব ধরনের উন্নয়ন কর্মকান্ডের সমন্বয়কারী জেলা প্রশাসনের জন্য অবমাননাকর। এ ধরনের বক্তব্য স্থানীয় জনগণের মাঝে একদিকে যেমন সরকারের সার্বিক সাফল্য সম্পর্কে ভুল বার্তা প্রেরণ করে, অন্যদিকে মাঠ প্রশাসনে সততা ও নিরপেক্ষতার সঙ্গে দায়িত্ব পালনের পথেও চরম প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে।

জেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির সব সদস্য এ ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন এবং প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন। এ ছাড়া এই ধরনের কর্মকান্ডে জড়িতদের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ঊর্ধ্বতনদের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়। সভার কার্যবিরণীর চিঠি স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের সিনিয়র সচিব হেলালুদ্দীন আহমেদসহ সংশ্নিষ্টদের পাঠানো হয়েছে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

Shares
আরো সংবাদ পড়ুন

আর্কাইভ | পুরাতন সংবাদ পড়ুন

Mon Tue Wed Thu Fri Sat Sun
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
293031  

© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
প্রযুক্তি সহায়তায়: 𝐘𝐄𝐋𝐋𝐎𝐖 𝐇𝐎𝐒𝐓