ঢাকার নবাবগঞ্জের যন্ত্রাইল ইউনিয়নের চন্দ্রখোলা নয়াহাটি এলাকায় চাচাত ভাই ভজন রায় (৫০)কে হত্যার দুদিন পর আত্মহত্যা করলেন মামলার আসামী মনোরঞ্জন রায় (৩৬)।
বুধবার (১৯ জুন) দুপুরে বাড়ি থেকে আধা কিলোমিটার দুরে শোল্লা ইউনিয়নের আবদানী এলাকার একটি পাট ক্ষেত থেকে মনোরঞ্জন রায়ের মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
নিহত মনোরঞ্জন রায় চন্দ্রখোলা নয়াহাটি এলাকার মৃত দুর্লভ রায়ের ছেলে। আর চাচাত ভাই ভজন রায় (৫০) ঐ গ্রামের মৃত কৃষ্ণ রায়ের ছেলে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, মনোরঞ্জন রায়ের স্ত্রী নিপা রায় (২৫) কেরানীগঞ্জের খোলামোড়ায় বাবার বাড়ি। তিনি বাবার বাড়িতেই বেশী সময় থাকেন। তিনি একাধিক পুরুষের সাথে পরকীয়া সম্পর্কে জড়িয়ে যান বলে পরিবারের অভিযোগ। এসব ঘটনায় চন্দ্রখোলা এলাকায় একাধিক গ্রাম্য শালিসীও হয়েছে। এ বিষয়ে ভাশুর ভজন রায় বাঁধা দিলে তাকে মারতে স্বামী মনোরঞ্জনকে পরামর্শ দেন নিপা
প্রতিবেশী ও পুলিশ সূত্র জানায়, সোমবার (১৭ জুন) সন্ধ্যায় ভজন রায় তাঁর চাচাতো ভাই মনোরঞ্জন রায়কে তাঁর স্ত্রীর অনৈতিক কর্মকান্ডের অভিযোগ জানায়। এসময় মনোরঞ্জনের স্ত্রীর বিরুদ্ধে কথা বলায় চাচাতো ভাই ভজনকে দেখে নেয়ার হুমকি দেয়। পরে রাত সাড়ে ৯টার দিকে দোকান থেকে বাড়ি ফেরার পথে চন্দ্রখোলা নয়াহাটি ব্রীজের উপর এলে লাঠি দিয়ে মাথায় উপর্যুপরি আঘাত করলে সে ব্রীজের উপর পড়ে যায়। স্থানীয়রা আহতাবস্থায় ভজন রায়কে নবাবগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে দায়িত্বরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় ভজনের স্ত্রী সবিতা রায় মঙ্গলবার সন্ধায় নবাবগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এ মামলার আসামী মনোরঞ্জনকে খুঁজছিলো পুলিশ।
বুধবার ((১৯ জুন)) সকালে বাড়ি থেকে আধা কিলোমিটার দুরে শোল্লা ইউনিয়নের আবদানী এলাকার একটি পাট ক্ষেতে এলাকাবাসী গোঙ্গানির শব্দ পেয়ে কাছে গিয়ে মনোরঞ্জনের নিথর দেহ পরে থাকতে দেখেন। তারা তাঁকে তুলে হাসপাতালে নেয়ার চেষ্টা করে। পথেই সে মারা যায়। স্থানীয় শোল্লা ইউপি সদস্য ফজলুল হক পুলিশকে খবর দেয়। সুরতহাল শেষে দুপুরে পুলিশ লাশ উদ্ধার থানায় নিয়ে যায়।
স্বজন ও এলাকাবাসীর অভিযোগ, স্ত্রী নিপা রায়ের পরকীয়ার বলি হয়ে স্বামী মনোরঞ্জন ও ভাশুর ভজনকে মৃত্যুর পথে পাড়ি জমাতে হলো। মনোরঞ্জনের স্ত্রী নিপা রায়ই এ দুটি মৃত্যুর জন্য দায়ী। তাঁর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া দরকার।
এবিষয়ে নিপা রায়ের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করে পাওয়া যায়নি। এমনকি তার অবস্থান সম্পর্কেও নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
নবাবগঞ্জ থানার ওসি মো. শাহজালাল বলেন, পুলিশ সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে মনোরঞ্জনের মৃতদেহটি উদ্ধার করেছে। ধারণা করা হচ্ছে হত্যা মামলার আসামী হওয়ার অনুশোচনা থেকে বিষপানে আত্মহত্যা করতে পারে।