কেরানীগঞ্জ(ঢাকা) প্রতিনিধি: ঢাকার কেরানীগঞ্জে তারানগর ইউনিয়নের মিলেনিয়াম সিটির পেঁপেরনী নামে একটি রেস্টুরেন্ট সেচ্ছাসেবক লীগ নেতার নেতৃত্বে দখলের কয়েক ঘন্টা পরে মসজিদ কমিটির সহায়তায় দখল মুক্ত করেছে ছাত্রদল নেতারা।
পেঁপেরনী রেস্টুরেন্টের মালিক মোঃ ইকবাল হোসেন জানান, প্রায় সাত বছর আগে মিলিনিয়াম সিটিতে লুটের চর সুলতান বেপারী জামে মসজিদের এই জায়গা ভাড়া নিয়ে পেঁপেরনী রেস্টুরেন্টের ব্যবসা ত শুরু করেন তিনি।
ঢাকা জেলা দক্ষিণ স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহ-সভাপতি পরিচয়দানকারী মিজানুর রহমানক নিজেকে ওই মসজিদের মতোয়াল্লী পরিচয় দিয়ে রেস্টুরেন্টের দশ বছরের অগ্রিম ভাড়া বাবদ সাড়ে ছয় লক্ষ টাকা তার কাছ থেকে গ্রহণ করেন । সেই চুক্তি অনুযায়ী আরো তিন বছর ব্যবসা পরিচালনা করার সময় রয়েছে তার। কিন্তু পরে খবর নিয়ে জানতে পারলাম মিজানুর রহমান তার কাছ থেকে ভাড়া বাবদ নেওয়া টাকা মসজিদ কমিটির কাছে জমা না দিয়েই তিনি নিজেই আত্মসাৎ করেছেন এবং তিনি ওই মসজিদের কোন মোতয়াল্লী নন ।
স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর থেকেই তিনি বিএনপি’র লোকজন তার রেস্টুরেন্ট দখল করে নেবে বলে তিনি তাকে নানাভাবে ভয় দেখিয়ে আসছিলেন। বেশ কয়েকদিন হল রেস্টুরেন্টের চাবি তার (মিজানুর রহমানের) কাছে হস্তান্তরের জন্য তাকে চাপ প্রয়োগ করে আসছিলেন।এই ঘটনার জের ধরেই আজ সকালে মিজানুর রহমানের নেতৃত্বে ১০-১২ জন লোক তার রেস্টুরেন্টের ভিতর অতর্কিতভাবে প্রবেশ করে কর্মচারীদের কাছ থেকে চাবি নিয়ে জোরপূর্বক তাদের বের করে রেস্টুরেন্টের মেইন গেটে তালা লাগিয়ে দেন।
পরে তিনি খবর পেয়ে মসজিদ কমিটির লোকজনকে বিষয়টি অবহিত করেন। এতে খবর পেয়ে লুটেরচর গ্রামের সুলতান বেপারী জামে মসজিদ কমিটির লোকজন ঘটনাস্থলে আসেন। এ সময় তারা স্থানীয় ছাত্রদলের নেতাকর্মী ও লোকজনের সহায়তায় রেস্টুরেন্টের মেইন গেটের তালা ভেঙ্গে রেস্টুরেন্টেি দখলমুক্ত করেন।
লুটের চর গ্রামের সুলতান বেপারী জামে মসজিদ পরিচালনা বর্তমান কমিটির সভাপতি আতাউর রহমান আইয়ুব জানান, রেস্টুরেন্টের জমি সুলতান বেপারী জামে মসজিদের সম্পত্তি। দখলবাজ মিজানুর রহমান এই মসজিদের কেউ নন। সে নিজেকে মসজিদের মোতয়াল্লী দাবি করে এতদিন মসজিদের দশ বিঘার মত সম্পত্তি বিভিন্নভাবে ব্যবহার করে তার টাকা অবৈধ ভাবে নিজে আত্মসাৎ করেছে । পেঁপেরনী রেস্টুরেন্ট হতেও সাড়ে ছয় লক্ষ টাকা নিয়েছে বলে আমরা জানতে পেরেছি।
বেশ কয়েকদিন যাবত পেঁপেরনী রেস্টুরেন্ট এর মালিকপক্ষ আমাদের সাথে যোগাযোগ করে আসছে। আমরা তাদের সাথে নতুন ভাড়াটিয়া চুক্তি করবো বলে আগেই একমত হয়েছি। আজ রেস্টুরেন্ট দখলের খবর পেয়ে আমরা মসজিদ কমিটির পক্ষ থেকে ঘটনাস্থলে এসেছি। ছাত্রজনতাকে দখলমুক্ত করার বিষয়ে আমরা সহায়তা করেছি।
দখলমুক্ত করতে আসা শাক্তা ইউনিয়নের ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নওশাদ আহমেদ বলেন,খবর পেয়ে আমরা পেঁপেরনী রেস্টুরেন্ট দখলমুক্ত করতে এসেছি। আওয়ামী সন্ত্রাসীরা নিজেরা অপকর্ম করে বিএনপির উপর যাতে কোন দায় চাপাতে না পারে সেজন্য আমরা এখানে দখল মুক্ত করতে এসেছি। কেরানীগঞ্জে কোন দখলবাজ, চাঁদাবাজের কেন স্থান হবে না। কোথাও দখল চাঁদাবাজির খবর পেলে এভাবেই ছাত্রজনতা রুখে দেবে।
এ ব্যাপারে ঘটনার বিষয়ে জানার জন্য ঢাকা জেলা দক্ষিণ সেচ্ছাসেবক লীগ নেতা মিজানুর রহমানের মোবাইল ফোনে বার বার কল করেও তাকে পাওয়া যায়নি।