1. info@asiabarta.news : এশিয়া বার্তা :
নৌকা বাইচ রক্ষায় ১৪ বছর ধরে কাজ করছেন সংগঠক রাশিম মোল্লা - এশিয়া বার্তা
মঙ্গলবার, ১৯ অগাস্ট ২০২৫, ১০:২৬ অপরাহ্ন
ঘোষণা:
জরুরী নিয়োগ চলছে দেশের প্রতিটি বিভাগীয় প্রতিনিধি, জেলা,উপজেলা, স্টাফ রিপোর্টার, বিশেষ প্রতিনিধি,নিয়োগ চলছে। আগ্রহীরা যোগাযোগ করুন: বার্তা বিভাগ-০১৭১৬৫৫৯১৯০
প্রধান খবর:
পাওনা টাকা দিতে গিয়ে নিখোঁজ নবাবঞ্জের ব্যবসায়ী জেলা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ দোহারে ইয়াবা রানী টুনি ও সহযোগী জসীম গ্রেফতার নবাবগঞ্জের কাশিমপুর থেকে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি রনি গ্রেপ্তার বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির প্রতিষ্ঠাতা খন্দকার আলী আব্বাসের স্মরণসভা দোহারে রাস্তা বন্ধ করে দেয়াল নির্মাণের অভিযোগ প্রান্তিক জনগোষ্টির স্বাস্থ্য সেবায় সবাইকে দায়িত্ব পালন করতে হবে- নবাবগঞ্জে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ উপদেষ্টা দোহারে ইয়াবাসহ মাদক কারবারী গ্রেপ্তার দোহারে ডাকাত সর্দার রমজানসহ ২ ডাকাত গ্রেপ্তার মানিকগঞ্জে রাস্তা বন্ধ করে ঘর নির্মাণ, দুর্ভোগে ছয় গ্রামের মানুষ

নৌকা বাইচ রক্ষায় ১৪ বছর ধরে কাজ করছেন সংগঠক রাশিম মোল্লা

  • প্রকাশিত: শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪
  • ১৪১ বার পড়া হয়েছে

দোহার (ঢাকা) প্রতিনিধি.

এক সময় এ দেশের মানুষের অন্যতম বিনোদন ছিল নৌকাবাইচ। এটি ছিল বাংলার লোকসংস্কৃতির একটি অন্যতম অংশ। ঢাকা, মুন্সিগঞ্জ ও মানিকগঞ্জে প্রায় একশ বছর আগে থেকেই ইছামতি, কালিগঙ্গা ও ধলেশ্বরীনদীর বিভিনন্ন পয়েন্টে ঘটা করে নৌকা বাইচ হতো। ঢাকার নবাবগঞ্জে ইছামতি নদীর বিভিন্ন পয়েন্টে মাস ব্যাপী নৌকা বাইচ হতো। কিন্তু ২০০১ সালে ঢাকার নবাবগঞ্জ ও মানিকগঞ্জের হরিরামপুরে কাশিয়াখালী ইছামতী নদীর মুখে বেড়িবাঁধ দেয়া হলে নদীর পানি কমে যায়। বর্ষা মৌসুমেও নদীতে বাইচ করার মতো পর্যাপ্ত পানি থাকতো না। ভাটা পড়ে নৌকা বাইচের। কালের পরিক্রমায় সেই বিনোদন বিলীন হওয়ার উপক্রম দেখা দেয়।

২০১০ সালে বাইচ প্রেমি রাশিম মোল্লা নৌকাবাইচ টিকিয়ে রাখতে মাসুদ রানাসহ আরো কয়েকজনকে নিয়ে গঠন করেন নৌকা বাইচ ঐতিহ্য রক্ষা কমিটি নামে একটি সংগঠন। সেই থেকে নৌকাবাইচ নেশায় মত্ত হয়ে ওঠেন তিনি। বর্ষা মৌসুম আসলে বাইচ করতেই হবে। দিন রাত বিভিন্ন জেলা উপজেলার নৌকার মালিক ও আয়োজদের সঙ্গে মিটিং করে সময় কাটান তিনি। গত ২০শে জুলাই তার গড়া সংগঠন নৌকা বাইচ ঐতিহ্য রক্ষা কমিটি পাড় করলো ১৪ বছর। তিনি বর্তমানে এই সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক। প্রতিষ্ঠা করেছেন নবাবগঞ্জ রোইং ক্লাব। তার এই ক্লাব জাতীয় ক্রীড়া সংগঠন বাংলাদেশ রোইং ফেডারেশনের এফিলেটেড ক্লাব। ২০২১ সালে বাংলাদেশ রোইং ফেডারেশনের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য নির্বাচিত হন তিনি। ২০২২ সালের ৩১শে মার্চ স্বাধীনতার রজত জয়ন্ত্রী উপলক্ষে বাংলাদেশ রোইং ফেডারেশন রাজধানীর হাতিরঝিলে আয়োজন করে আন্তর্জাতিক নৌকা বাইচ। বাইচে আর্ন্তজাতিক ও জাতীয় দুটি ইভেন্ট ছিল। আন্তর্জাতিকে বাংলাদেশের হয়ে সাদা দলের কোচ হিসেবে নেতৃত্ব দেন রাশিম মোল্লা। এই ইভেন্টে তার সাদা দল তৃতীয় স্থান অর্জন করে। জাতীয় ইভেন্টেও তৃতীয় হয় তার প্রতিষ্ঠিত নবাবগঞ্জ রোইং ক্লাব।

কথা হয় রাশিম মোল্লার সঙ্গে। কিভাবে যুক্ত হলেন নৌকা বাইচে। জানতে চাওয়া হয় সফলতার পেছনের গল্প। তিনি বলেন, ২০১০ সালে নৌকাবাইচ টিকিয়ে রাখতে মাসুদ মোল্লাসহ আরো কয়েকজনকে নিয়ে সভা করে একটি সংগঠন করার প্রস্তাব দেই। কিভাবে নৌকা বাইচের আগের সেই জৌলুশ ফিরিয়ে আনা যায়? হুট করেই একদিন গঠন করে ফেলি নৌকা বাইচ ঐতিহ্য রক্ষা কমিটি। গঠন করা হয় আহŸায়ক কমিটি। এতে আহবায়ক করা হয় মাসুদ মোল্লাকে এবং সদস্য সচিব করা হয় আমাকে। সদস্য করা হয় দুলাল দেওয়ান সহ আরো কয়েকজনকে। তিনি বলেন, ভাদ্র মাস আসলেই নৌকার মালিকদের মধ্যে, কমিটির কর্মকর্তাদের চরম তৎপরতা দেখা যায়। এরপর আবার ঝিমিয়ে পড়ে। বছরের বহু সময় নৌকার মালিক, বাইচ প্রেমিদের খোঁজে খাঁজে সংগঠনের প্রযোজনীয়তার কথা বলি। কখনো মুন্সিগঞ্জের শ্রীনগরে, আবার কখনো মানিকগঞ্জের সিঙ্গাইর ও হরিরামপুরে বাইচ প্রেমিদের সংগঠিত করতে কাজ করি।

সংগঠনের সভাপতি মাসুদ মোল্লা বলেন, ২০১৫ সালে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা নিয়ে আবার শুরু হয় সংগঠনের কার্যক্রম। ফের আহবায়ক কমিটি করা হয়। এবারও আমাকে আহŸায়ক ও রাশিম মোল্লাকে সদস্য সচিব করা হয়। এ যাত্রায় নতুন করে যুক্ত হন ক্রীড়ামোদী দুলাল দেওয়ান। তরুন প্রজন্মের সাংবাদিক ইমরান হোসেন সুজন, শাহীনূর তুতী ও বিপ্লব ঘোষ। এরপর ২০১৬ সালে গঠন করা হয় ৫১ সদস্য বিশিষ্ট কার্যনির্বাহী কমিটি। এতে সভাপতি করা হয় আমাকে এবং রাশিম মোল্লাকে সাধারণ সম্পাদক হওয়ার জন্য আহবান করা হয়। কিন্তু তিনি সংগঠনের ভিত্তি মজবুত করতে সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্ব নেন। গতি আসে নৌকা বাইচ ঐতিহ্য রক্ষা কমিটির সংগঠনিক কার্যক্রমে। এলাকায় কিছুটা হলেও আগের নৌকা বাইচে উৎসবের ইমেজ ফিরে আসতে শুরু করে। এখন নৌকা বাইচে পুরস্কার দেয়া হয় পালসার মোটর সাইকেল। বিশাল বিশাল ফ্রিজ আর এলইডি টেলিভিশন। তিনি জানান, রাজধানী বুড়িগঙ্গা নদীতে নৌকাবাইচ করার স্বপ্ন দেখেন রাশিম মোল্লা। কিভাবে আয়োজন করা যায়? বিভিন্ন লোকজনের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। উদ্বুদ্ধ করার চেষ্টা করেন বহুজনকে। পরে ২০১৯ সালে ঢাকার কামরাঙ্গীরচরের ৫৭নং ওয়ার্ড কমিশনার এবং ২০২১ সালে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীন নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের(বিআইডবিøউটিএ) উদ্যেগে বুড়িগঙ্গা নদীর কামরাঙ্গীরচর অংশে নৌকা বাইচ করতে সক্ষম হন। আমাদের সবচেয়ে বড় বিজয় পদ্মায় নৌকাবাইচ করতে সক্ষম হন তিনি। আমাদের সংগঠনের ৬টি নৌকা সেখানে অংশ নেয়।

সূত্র জানায়, এই সংগঠনের কার্যক্রম এখন রাজধানী ঢাকা, মানিকগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জ ও নারায়ণগঞ্জ জেলায়। ২০১৯ সালে রাজধানী বুড়িগঙ্গার কামরাঙ্গীর চরে নৌকা বাইচ করতে ৫৭নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর সাইদুল মাদবরের সঙ্গে সংগঠনের সভাপতি, বর্তমান সাধারণ সম্পাদক ও ক্রীড়া সম্পাদকসহ নেতৃবৃন্দকে নিয়ে সভা করে। সভায় রাশিম মোল্লা বুড়িগঙ্গায় হারানো নৌকা বাইচ ঐতিহ্য ফেরাতে নৌকা বাইচ আয়োজন করার আহŸান জানান। কাউন্সিলর রাজি হন। আয়োজন করেন বিশাল নৌকা বাইচ। বাইচে সংগঠনের ৮/১০টি নৌকা অংশগ্রহন করে। এরপর ২০২১ সালে বিআইডব্লিউটিএ’ আয়োজন করে নৌকা বাইচ। এই বাইচের আয়োজনেও সহায়তা করে তার গড়া নৌকা বাইচ ঐতিহ্য রক্ষা কমিটি। সর্বশেষ পদ্মা সেতু উদ্ধোধনের দিন বাংলাদেশ অভ্যন্তরীন নৌপরিবহন কতৃপক্ষের উদ্যোগে আয়োজিত নৌকাবাইচে অংশ নেয় তার সংগঠনের ৬টি নৌকা। এ ব্যাপারে রাশিম মোল্লা বলেন, বিবিআইডব্লিউটিএ তিন দিন আগে উত্তাল পদ্মায় নৌকা বাইচ করতে চান বলে আমাকে জানান। সময় স্বল্পতার কারণে প্রথমে বারণ করি। পরে অনেক কষ্টে বাইচের নৌকার মালিকদের সঙ্গে কথা বলে ৬টি নৌকা রাজি করি। পরের দিন সকালে নৌকা নিয়ে যাত্রা শুরু করি। রাতে মাওয়া ঘাটে আমাদের নৌকা পৌছায়। পরের দিন ভোর সকালে উত্তাল পদ্মার স্রোত পাড়ি দিয়ে মাদারীপুর শিবচরের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করি। সঙ্গে ছিলেন সংগঠনের সভাপতি মাসুদ মোল্লা ও ক্রিড়া সম্পাদক দুলাল দেওয়ান। পদ্মার মাঝ পথে যাওয়ার পর একটু ভয় পেয়ে যাই। কিছুক্ষণ চোখ বন্ধ করে থাকি। এরপর দুই ঘন্টা পর পৌছি অনুষ্ঠানাস্থালে।

কালা চান রকেটের মালিক সুবল মিস্ত্রী বলেন, আমর বাবা দেশ স্বাধীন হওয়ার আগে থেকেই নৌকা বাইচ করত। ২০০১ সালের দিকে নদীতে পানি কমে যাওয়ায় এই অঞ্চলে নৌকা বাইচ প্রায় বন্ধ হয়ে যায়। ২০১০ সালে রাশিম মোল্লা নৌকা বাইচ ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে মাসুদ মোল্লাকে নিয়ে একটি কমিটি করে। তার প্রচেষ্টায় এখন প্রতি বছরই ঢাকার নবাবগঞ্জ ও মানিকগঞ্জের সিঙ্গাইরের বেশ কয়েকটি পয়েন্টে নৌকা বাইচ হচ্ছে। আমি নবাবগঞ্জের ইছামতি নদী ও সিঙ্গাইরের কালিগঙ্গা নদীতে নৌকা বাইচ করি। বুড়িগঙ্গা নদীতে কখনো বাইচ করি নাই। ২০১৯ সালে ও ২০২১ সালে রাশিম মোল্লা বুড়িগঙ্গা নৌকা বাইচে অংশ নিতে দাওয়াত করে। দুটি বাইচেই তার কারণে অংশ নিতে সক্ষম হই। বলধারার ঐতিহ্য নৌকার মালিক আনোয়র হোসেন বলেন, আমরা রাশিম ভাই এর নেতৃত্বে গত দুই বছর বুড়িগঙ্গা ও পদ্মায় নৌকাবাইচে অংশ নিয়েছি।

সংবাদটি শেয়ার করুন

Shares
আরো সংবাদ পড়ুন

আর্কাইভ | পুরাতন সংবাদ পড়ুন

Mon Tue Wed Thu Fri Sat Sun
 123
45678910
11121314151617
18192021222324
25262728293031

© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
প্রযুক্তি সহায়তায়: 𝐘𝐄𝐋𝐋𝐎𝐖 𝐇𝐎𝐒𝐓