কাজী জোবায়ের আহমেদ.
মাদকের ভয়াল ছোবলে দিন দিন শেষ হয়ে যাচ্ছে হাজারো যুবক। সারাদেশে প্রশাসনের অভিযান থাকলেও আইনের ফাঁকে বেড়িয়ে আসে অপরাধীরা। এরই ধারাবাহিকতায় দোহারেও ধারাবাহিক অভিযান করে জেল জরিমানা দিলেও শতভাগ বন্ধ হয়নি মাদকের কেনাবেচা ও সেবন। সরকার পতনের পর প্রশাসনের কিছুটা স্থবিরতায় অনেকটা স্বাধীনভাবে মাদকের বেচাকেনা চলছে এমনটা জানান কয়েকটি এলাকার বাসিন্দারা। অনুসন্ধানে জানা যায়, ঢাকার দোহার উপজেলার বেশ কয়েকটি পয়েন্টে বিক্রি করা হচ্ছে মাদক। যার বেশিরভাগই জরিত ১৬ থেকে ২৫ বছরের যুবকেরা। এদের কিছু কিছু পরিবারের অভিভাবকরা অসহায় হয়ে পরে সন্তানদের কাছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দোহার ঘাটার এক ব্যক্তি বলেন,বাবা আমি আর পারছিনা। এই বয়সে কাজ করে খাই,সংসার চলে না ছেলেটা ইয়াবা খেয়ে শেষ হয়ে যাচ্ছে। ওকে আমি কোন ভাবেই থামাতে পারছিনা।
মাহমুদপুর ইউনিয়নের হরিচন্ডী এলাকার এক মহিলা বলেন, ভাই আমার ছেলেটার বয়স মাত্র ১৬ বছর। মাদকের সাথে জরিয়ে গিয়ে শেষ হয়ে যাচ্ছে। বারবার বলার পরেও কাজ হচ্ছে না। যাদের সাথে মাদক সেবন করে তাদের কিছু বলা যায়না ভয়ে।
এদিকে দোহারের বিভিন্ন স্পটে ঘুরে দেখা যায় সন্ধ্যা নামলেই নির্দিষ্ট স্থানে মাদক ব্যবায়ীরা বিক্রি করতে আসে ইয়াবা, হেরোইন,গাঁজা। নাম প্রকাশ না করারা শর্তে এক মাদক সেবনকারী জানান। সন্ধ্যার পর থেকে এসব মাদক কিনতে পাওয়া যায়। মাঝে মাঝে পরিবর্তন হয় মাদক বিক্রির স্থান।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, উপজেলার মাহমুদপুর ইউনিয়নের হাজাম বাড়ির মোড়ের পাশে সন্ধ্যা থেকে রাত ১১ টা পর্যন্ত বিক্রি হয় মাদক। এছাড়া দোহারের সোনার বাংলা এলাকার খালপার, কলাবাগান, বটতলার পাশে, বটিয়া মসজিদ রাস্তায়, দোহার ঘাটা এলাকার সুলতান খানের মসজিদের পাশে, দোহার পুরি,খালপাড় ও নুরপুর এলাকায় বিক্রি হয় মাদক।
এদিকে রাইপাড়া স্কুলের পেছনে, লটাখোলা বীলের পার, নারিশার সুইচ গেইটের পাশে,ঝনকি এলাকায়, মুকসুদপুর ইউনিয়নের সাতভিটা এলাকায় সন্ধ্যার পর বিক্রি হয় বলে জানা যায়। বেশিরভাগ সময় মটরসাইকেলযোগে মাদক বহন করা হয়। অনেক ক্ষেত্রে রিক্সার চালকের মাথায় গামছা বেধে সেই গামছার ভেতরে গাঁজা বহন করা হয়।
ভ্রাম্যমান আদালতে সাজা ও মামলা হলেও আইনের মাধ্যমে আবার জামিনে আসে মাদক ব্যবসায়ীরা। এদিকে গত ৫ আগষ্ট সরকার পতনের পর পুলিশের তৎপরতা কম হওয়ায় মাদক ব্যবসায়ীরা অনেকটা স্বচ্ছন্দে মাদক বেচাকেনা করছে। এতে উদ্বিগ্ন হয়ে পরেছে অনেক অভিভাবকসহ সচেতন মানুষ। শীঘ্রই এবিষয়ে প্রশাসনের অভিযান শুরুর আহ্বান জানান অনেকে।