দেওয়ান আবুল বাশার, মানিকগঞ্জ:
মানিকগঞ্জ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বাংলাদেশ নার্সেস এসোসিয়েশন (বিএনএ) এর সাধারণ সম্পাদক মোঃ মামুনের বিরুদ্ধে অনিয়ম, দুর্নীতি ও নৈতিক স্খলনের অভিযোগ উঠেছে। হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, অর্থের বিনিময়ে নার্সদের পছন্দের জায়গায় বদলি, ওয়ার্ডের ইনচার্জ বানানোর প্রলোভনে অর্থ দাবি, বান্ধবী কিমিয়াকে নিয়ে অতিরঞ্জিত মাখামাখি এবং অব্যবহৃত কেবিন সি ব্লকের চাবি নিজ দখলে রেখেছেন মামুন। সেখানে অনৈতিক কার্যকলাপের আলামত রয়েছে বলে সূত্রটি দাবি করেছেন। এছাড়াও দীর্ঘদিন ধরে কেবিনের দায়িত্ব পালন, মতের অমিল হলেই ক্ষমতা ও পদের অপব্যবহার করছেন তিনি। রোস্টারের দায়িত্বে থাকা শেফালীকে দিয়ে যাকে তাকে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়াসহ স্বেচ্ছাচারিতা করে যাচ্ছেন মামুন।
অভিযোগের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছেন ইন্টার্ন নার্স জান্নাতুল তাবাসসুম কিমিয়া, যিনি কেবিনে এক মাসের পরিবর্তে দুই মাস ডিউটি করেছেন। এই সময়কালে মামুনের সাথে তার অনৈতিক সম্পর্ক গড়ে ওঠে বলে অভিযোগ। তাদের একসাথে মেট্রোতে ঘোরাঘুরি এবং একই রঙের গেঞ্জি পরে ফেসবুকে ছবি পোস্ট করা নিয়ে হাসপাতালজুড়ে ব্যাপক গুঞ্জন সৃষ্টি হয়। পরবর্তীতে মামুন সেই পোস্ট হাইড করে ফেলেন।
সূত্র আরও জানায়, দীর্ঘদিন ধরে কেবিনের দায়িত্ব পালন করছেন বিএনএ পদধারী মামুন ও তার চক্র। নিয়ম অনুযায়ী, কোনো নার্সের একই বিভাগে দুই বছরের বেশি সময় দায়িত্ব পালনের সুযোগ নাই। এই চক্রটি দীর্ঘদিন ধরে কেবিনের নিয়ন্ত্রণ ধরে রেখেছে। কিছুদিন আগে নার্সিং সুপারভাইজার রিজিয়ার কাছে তাহেরা নামের এক নার্স অভিযোগ করেন, তাকে টাকা দিয়ে মেডিসিন ওয়ার্ডের ইনচার্জ বানাতে চাচ্ছেন মামুন। নার্স রোজিনা এবং শারমিন মামুনকে টাকা দিয়ে তারা টাঙ্গাইল ও ফরিদপুর মেডিকেলে বদলি হয়েছেন। রোজিনা বলেন, টাকা দিয়েই আমরা বদলি হয়েছি। রোস্টারের দায়িত্বে থাকা শেফালী বলেন, “তারা আমার কাছে অন্যায় আবদার করলে সেগুলো আমি কখনোই শুনি নাই। কিন্তু সেই কথাগুলোই যখন ইনচার্জ বলেছে তখন শুনতে হয়েছে।” আব্দুল আলীম বলেন, “আমাকে মামুন সিন্ডিকেট কি কারণে ডায়ালাইসিস থেকে সরিয়ে দিল সেটা আমার বোধগম্য নয়। তবে বিষয়টি আমার জন্য খুবই বিব্রতকর।
” বাংলাদেশ নার্সের এসোসিয়েশন (বিএনএ) মানিকগঞ্জ মেডিকেল কলেজ শাখার সাধারণ সম্পাদক মো. মামুন বলেন, “বিভিন্ন অভিযোগ থাকায় আব্দুল আলীমকে বদলির সুপারিশ করেছিলাম। এছাড়াও যাদেরকে দায়িত্ব থেকে সরানো হয়েছে তাদেরকে সঙ্গত কারণেই সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। কেবিন সি ব্লকের চাবি আমার কাছে আছে। ওখানে কোন অপকর্ম হয়ে থাকলেও সেটা অন্য কারো দেখার কথা না। ইন্টার্ন নার্স কিমিয়ার সাথে আমার প্রেমের সম্পর্ক ছিল। তাকে নিয়ে মেট্রোতে ঘুরতে গিয়েছিলাম। একই কালারের গেঞ্জির যে ছবি দেখছেন। সেটা আমিই ফেসবুকে পোস্ট করেছিলাম। বর্তমানে কিমিয়ার সাথে আমার কোন সম্পর্ক নেই। ফেসবুকের ছবি অনলি মি করে রেখেছি।” এ বিষয়ে মানিকগঞ্জ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডাক্তার মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, লিখিত কোন অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।