নিজস্ব প্রতিনিধি.
ঢাকার দোহার বিএনপি নেতা হারুন মাস্টার হত্যাকন্ডে ব্যবহৃত মোটরসাইকেল উদ্ধারসহ জিহাদ চোকদার (২০) নামে এক আসামীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার (১৪ জুলাই) সন্ধা রাতে নবাবগঞ্জ উপজেলার নতুন বান্দুরা এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। বুধবার (১৫ জুলাই) বিকেলে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে ঢাকা জেলা দোহার সার্কেল এর সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মোঃ আশরাফুল আলম সাংবাদিকদের এ তথ্য নিশ্চিত করেন। গ্রেপ্তারকৃত আসামী জিহাদ চোকদার নবাবগঞ্জ উপজেলার বান্দুরা এলাকার স্বপন চোকদারের ছেলে বলে জানিয়েছেন পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গত বুধবার (২ জুলাই) সকাল আনুমানিক ৬টার দিকে দোহার উপজেলার নয়া বাড়ি ইউনিয়ন বিএনপি'র সাবেক সভাপতি এবং বাহ্রা হাবিল উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক মোঃ হারুন অর রশিদ ওরফে হারুন মাস্টারকে অজ্ঞাতনামা দুষ্কৃতিকারীরা গুলি করে ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে গুরুতর রক্তাক্ত জখম করে। পরবর্তীতে তার পরিবারের লোকজন দোহার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এ নিয়ে এলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় নিহত হারুন মাস্টারের ভাই আব্দুল মান্নান বাদী হয়ে দোহার থানায় ৭ জনকে আসামী করে ও অজ্ঞাতনামা আরও ১০-১৫ জনের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা দায়ের করলে মামলাটি আমলে নিয়ে ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার মোঃ আনিসুজ্জামান পিপিএম মামলাটি তদন্তপূর্বক হত্যার সাথে জড়িত আসামিদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার ও ঘটনার মূল রহস্য উদঘাটনের জন্য বিশেষ নির্দেশনা প্রদান করেন। পরে ঢাকা জেলা পুলিশ সুপার এর নির্দেশক্রমে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তরিকুল ইসলাম এর সার্বিক তত্ত্বাবধানে ও নেতৃত্বে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই জুবাইদুলসহ দোহার থানার একটি চৌকস টিম সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করে ও তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় আসামী জিহাদ চোকদারকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয় এবং হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত মোটরসাইকেল জব্দ করে তা উদ্ধার করা হয়।
পুলিশ আরও জানায়, গ্রেপ্তারকৃত আসামীকে জিজ্ঞাসাবাদ কালে সে ঘটনার সহিত জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেন এবং অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য প্রদান করে। ঢাকা জেলা দোহার সার্কের এর সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মোঃ আশরাফুল আলম বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তারকৃত আসামী জিহাদসহ তার সহযোগীরা মিলে তিন মাস আগেও একবার হারুন মাস্টারকে হত্যা করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয় এবং দীর্ঘ দিনের পরিকল্পনায় তার মোটরসাইকেল দিয়ে খুনিরা ঘটনাস্থল রেকি করে ও সর্বশেষ এই হত্যাকাণ্ড ঘটায়। গ্রেপ্তারকৃত আসামীকে পুলিশ প্রহরায় বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।
উল্লেখ্য যে, গত ৮ জুলাই তদন্তে প্রাপ্ত আসামী মহসিনকে গ্রেপ্তার করে বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করা হয় এবং আসামী মহসিন ঘটনায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে বিজ্ঞ আদালতে স্বেচ্ছায় স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দী প্রদান করেন। এছাড়াও অত্র মামলা তদন্ত কালে গত ৬ জুলাই মামলা এজাহার নামীয় ৬নং আসামী ফারুক হোসেনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। হারুন মাস্টার হত্যাকাণ্ডে এই পর্যন্ত মোট ৩ জন আসামীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারীদের গ্রেপ্তারসহ হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত অস্ত্র উদ্ধার এর জন্য অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে জানিয়েছেন পুলিশ।