দেওয়ান আবুল বাশার, মানিকগঞ্জ:
মানিকগঞ্জে পার্শ্ববর্তী বসতবাড়ি ও কৃষি জমির মাটি কেটে রাস্তা ভরাট করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন গ্রামের সাধারণ মানুষ। এই ঘটনায় ক্ষুব্ধ ও অসহায় বোধ করছেন ভুক্তভোগীরা। জানা গেছে, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) ঘিওর উপজেলার তত্বাবধানে কালাচাঁদপুর-শিবপুর, হেলিপ্যাড থেকে ঘিওর বড়টিয়া পর্যন্ত দেড় কিলোমিটার রাস্তা উন্নয়নের দায়িত্ব পায় রাকা এন্টারপ্রাইজ।
জিডিপি-৩ প্রকল্পের আওতায় এ কাজের ব্যয় ধরা হয়েছে ১ কোটি ৭৫ লাখ ৫৮ হাজার ৪৭৯ টাকা। অভিযোগ উঠেছে, রাস্তা নির্মাণের জন্য প্রয়োজনীয় মাটি সংগ্রহ করতে গিয়ে ঠিকাদারের লোকজন জোরপূর্বক এলাকার মানুষের কৃষি জমি এবং বসতভিটা থেকে মাটি কেটে নিয়েছে। ভুক্তভোগীরা বাধা দিলেও কাজ হয়নি। উল্টো ভয়-ভীতি দেখিয়ে তাদেরকে দমিয়ে রেখেছে ঠিকাদারের লোকজন।
রবিবার সরেজমিনে পরিদর্শন করে দেখা যায়, কালাচাঁদপুর পালপাড়ার রামচরণ, আশিষ পাল, রমন পাল, চিত্তরঞ্জন পাল, মঙ্গল পাল, সাধন পাল, নিতাই পালসহ আরও অনেকের বসতভিটা কেটে গভীর পুকুরের মতো গর্ত তৈরি করা হয়েছে। এতে তাদের বসতভিটা, টয়লেট গোসলখানা ভেঙে পড়ার ঝুঁকিতে পড়েছে। এমনকি ঘরে প্রবেশের জায়গাও কেটে নেওয়া হয়েছে।
কান্নাজড়িত কণ্ঠে সাধনা রাণী পাল বলেন, “আমাদের বসতভিটার তিন জায়গা থেকে গভীর করে মাটি নিয়েছে। বড় বড় গাছও কেটে ফেলেছে। আমি একজন অপারেশনের রোগী, আমার স্বামীর একটি চোখ নেই। আমরা তাদের কাছে অসহায় হয়ে পড়েছি।” জগো মন্ডল জানান, “বাড়ি কেটে রাস্তা তৈরি হচ্ছে, এমনটা জীবনে কোনোদিন দেখিনি। মীর মোসলেম বলেন, “আমার প্রায় আধা কিলোমিটার ফসলি জমির মাটি কেটে রাস্তায় নেওয়া হয়েছে। কৃষি জমি, বসতভিটা কিছুই বাদ দেয়নি তারা। নির্বিচারে মাটি কেটে নিয়েছে।
সুমিতা পাল বলেন, “আমরা মাটির জিনিসপত্র তৈরি করি। আমাদের পুনসহ কেটে নিয়ে গেছে। আমরা এখন মাটির জিনিসপত্র তৈরি করতে পারতেছি না”। আমার শ্বশুর বাধা দিয়েছিল কিন্তু তারা সেই বাধা শুনেনি। এ বিষয়ে রাকা
এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী, আবুল কালাম আজাদ বলেন, আমার লাইসেন্স নিয়ে তৌহিদ বাবু নামের একজন এই কাজটি করছে। এ বিষয়ে আমি কিছুই বলতে পারব না।
এলজিইডি ঘিওর উপজেলার প্রকৌশলী শাহিনুজ্জামান বলেন, “বসতভিটার মাটি কেটে নেওয়ার বিষয়টি আমরা জেনেছি। ঠিকাদারকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, রাস্তায় যখন বালির কাজ হবে তখন বসতভিটার ওই জায়গাগুলো ভরাট করে দিতে হবে।
এলজিইডি মানিকগঞ্জের নির্বাহী প্রকৌশলী এ বি এম খোরশেদ আলমও একই আশ্বাস দিয়ে বলেন, “বসতভিটার যেসব জায়গা থেকে মাটি কেটে নেওয়া হয়েছে, সুপারভিশনের সময় সেসব জায়গা ভরাট করে দিতে ঠিকাদারকে বলে দেওয়া হয়েছে।”