(সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি:
সুনামগঞ্জের শাল্লার সুরমা নদীতে গ্রাম বাংলার হাজার বছরের ঐতিহ্যবাহী নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়েছে। নদীর দুই পাশে লাখো মানুষের ভিড় দেখা গেছে। নৌকার রেস আসামাত্র দর্শকদের মধ্যে দেখা যায় অন্যরকম উচ্ছ্বাস। শুক্রবার দুপুর ২টায় শ্যামারচর বাজার এলাকায় বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামের মনোনীত প্রার্থী ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এড. শিশির মনিরের ব্যক্তিগত উদ্যোগে অনুষ্ঠিত হয় নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতা। স্থানীয়রা জানান, সকাল থেকেই সুনামগঞ্জ ছাড়াও হবিগঞ্জ, নেত্রকোনা, আজমিরীগঞ্জ, খালিয়াজুড়ি ও রাজধানী ঢাকা থেকে লক্ষাধিক দর্শক উপস্থিত হয় নদী পাড়ে। দুপুর ২টায় শুরু হয় বাইচ। রাইচে ২৪টি নৌকা অংশ গ্রহণ করে। দুটি করে নৌকার প্রতিযোগিতা শুরু হয়। প্রতিযোগিতা শেষে বিজয়ীওেদর মধ্যে পুরস্কার বিতরণী করা হয়। এতে প্রথম পুরস্কার সোনার হরিণ পায় আইয়ুব শহ তরী, দ্বিতীয় পুরস্কার সোনার প্রজাপতি পায় স্বপ্নের তরী-২ এবং ৩য় পুরস্কার মোটর সাইকেল পায় হামজার তরী। নৌকাবাইচের মতো ঐতিহ্যবাহী আয়োজনে এলাকায় পুরনো সংস্কৃতি ফিরে আসার পাশাপাশি ভ্রাতৃত্ববোধ ও সামাজিক বন্ধনও আরও দৃঢ় হয়েছে। নারী-পুরুষ, শিশু-কিশোরসহ পরিবার নিয়ে অনেকে প্রতিযোগিতা উপভোগ করেন।
নৌকা বাইচ ঐতিহ্য রক্ষা জাতীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক রাশিম মোল্লা বলেন, সুনামগঞ্জের শাল্লায় নৌকা বাইচ প্রেমি ও সুপ্রিম কোর্টের এডভোকেট শিশির মনির ব্যাক্তি উদ্যোগে বাইচ আয়োজন করেছেন। তাকে আমাদের সংগঠনের পক্ষ থেকে ধন্যবাদ জানাই। নৌকা বাইচ এখন অনেক ব্যয়বহুল আযোজন। সরকারের পক্ষ থেকে ফুটবল, ক্রিকেট খেলার আয়োজন করলেও নৌকা বাইচ আয়োজন করা হয় না। এমনকি কোনো সহযোগিতাও করে না। তবে এলাকাবাসীর সহযোগিতায় এখনো নৌকা বাইচ আয়োজন করা হচ্ছে। আমাদের সংগঠনের পক্ষ থেকে দাবি করছি, প্রতিটি জেলা ও উপজেলায় একটি করে নৌকা বাইচ আয়োজনের।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে এড. শিশির মনির বলেন, ‘যুবসমাজকে মাদকাসক্তি থেকে দূরে রাখতে এবং বিনোদনের সুযোগ সৃষ্টি করতেই এ আয়োজন। আমরা চাই না সমাজে হানাহানি ও মারামারি হোক, বরং সৌন্দর্য ও ভালোবাসায় সবাই মিলেমিশে বসবাস করুক। তিনি জানান, চলতি বছরই ছায়ার হাওর ও কালনী নদীতে আরও নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতা আয়োজনের পরিকল্পনা রয়েছে। পাশাপাশি গ্রামীণ খেলাধুলা যেমন লাঠিখেলা ও হা-ডু-ডু আয়োজনেরও উদ্যোগ নেয়া হবে।
গাজীপুরে সাংবাদিক হত্যা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সাংবাদিকদের স্বাধীনতা গণতন্ত্রের জন্য অপরিহার্য। যা ঘটেছে তা কোনোভাবেই কাম্য নয়। ঢাকায় গিয়ে খোঁজ নিয়ে যতটুকু সম্ভব ভিকটিমকে সহযোগিতা করবো।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন- আটগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল নোমান, বাহাড়া ইউপি চেয়ারম্যান বিশ্বজিৎ চৌধুরী নান্টু, শাল্লা ইউপি চেয়ারম্যান মো. আব্দুস সাত্তার, শাল্লা উপজেলা জামায়াতের আমীর মাওলানা নূরে আলম সিদ্দিকী, সাধারণ সম্পাদক আবুল খায়ের, দিরাই উপজেলা জামায়াতের আমীর মো. আব্দুল কদ্দুস, সেক্রেটারি মো. আল আমীরসহ স্থানীয় রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, গণ্যমান্য ব্যক্তি ও গণমাধ্যমকর্মীরা।