দেওয়ান আবুল বাশার, মানিকগঞ্জ:
মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার মূলজান এলাকায় পৌরসভার ময়লার ভাগাড় সরানোর দাবিতে ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করে মানববন্ধন করেছে এলাকাবাসী। গ্রামবাসীর অভিযোগ, এই ভাগাড়ের কারণে তিন গ্রামের মানুষ স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়েছে, সেইসাথে নষ্ট হচ্ছে কৃষিজমি। সোমবার সকাল ১১টার দিকে মূলজান বাসস্ট্যান্ডের কাছে এই প্রতিবাদ কর্মসূচি পালিত হয়।
এসময় মূলজান, ভাটবাউর ও বাগজান গ্রামের বাসিন্দারা, বিভিন্ন স্কুল-মাদ্রাসার শিক্ষক-শিক্ষার্থী, এবং স্থানীয় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কর্মীরা অংশ নেন। তাদের হাতে “লোকালয়ে ভাগাড় কেন?”, “দূষণ চাই না, সঠিক ব্যবস্থাপনা চাই”, “ভাগাড় সরাও, কৃষিজমি বাঁচাও”, এবং “আমরা শিশু, আমাদের বাঁচতে দাও” ইত্যাদি স্লোগান লেখা প্ল্যাকার্ড ছিল। মূলজান হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক সলিম উদ্দিন জানান, রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে এই কৃষি জমিতে ময়লার ভাগাড় স্থাপন করা হয়েছে।
একই অভিযোগ করে বিএনপি নেতা আনিসুর রহমান ফরহাদ বলেন, এর আগেও তারা ভাগাড় সরানোর দাবিতে আন্দোলন করেছিলেন, কিন্তু তৎকালীন সরকার তা দমন করে। আরেক বিএনপি নেতা সানাউল হক টুলু বলেন, ২০১৪ সালে পৌর এলাকার বাইরে অপরিকল্পিতভাবে এই ডাম্পিং পয়েন্ট তৈরি করা হয়। এর ফলে শিশুরা চরম স্বাস্থ্যঝুঁকিতে রয়েছে এবং বসবাসের পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। দিঘি শান্তি সংঘের প্রধান তত্ত্বাবধায়ক হাফেজ মাওলানা আশিকুল ইসলাম সানোয়ার বলেন, অবিলম্বে এই ময়লার ভাগার সরিয়ে না নেওয়া হলে লাগাতার কর্মসূচি দেওয়া হবে।
মানিকগঞ্জ পৌরসভার প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. বজলুর রহমান জানান, ডাম্পিং পয়েন্টটি আইনি প্রক্রিয়া মেনেই স্থাপন করা হয়েছে। ২০১২ সালে ভূমি অধিগ্রহণ করা হয় এবং পরবর্তীতে আরও কিছু জমি কেনা হয়েছে। অন্যদিকে, মানিকগঞ্জ পৌরসভার প্রশাসক সানজিদা জেসমিন বলেন, এটি সাবেক মেয়র মো. রমজান আলীর আমলে স্থাপন করা হয়েছিল এবং এর পরিবেশ দূষণ সম্পর্কে তিনি অবগত। তিনি আরও জানান, বায়ু দূষণ রোধে ভাগাড়টিকে রিসাইক্লিং প্রক্রিয়ায় রূপান্তরের জন্য একটি প্রকল্পের অনুমোদন প্রক্রিয়া চলছে। প্রায় আধা ঘন্টা অবরোধ চলার পর পুলিশের হস্তক্ষেপে এবং প্রশাসনের আশ্বাসে আন্দোলনকারীরা কর্মসূচি প্রত্যাহার করেন। মানববন্ধন কর্মসূচিতে স্কুল ও মাদ্রাসার ছাত্র-ছাত্রীরাও তাদের ক্ষোভ প্রকাশ করে বক্তব্য দেয়।