দেওয়ান আবুল বাশার, মানিকগঞ্জ:
মানিকগঞ্জে চিকিৎসা নিতে এসে একের পর এক মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে। এতে আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন সাধারণ মানুষ। গত শুক্রবার বাসস্ট্যান্ড এলাকার ইউনাইটেড হাসপাতালে টনসিল অপারেশনের সময় একজন রোগীর মৃত্যু ঘটে। তার পরদিনই একই এলাকায় আবারো অপারেশনের পর মারা গেলেন আরেক নারী।
জানা গেছে, শিবালয় উপজেলার তেওতা ইউনিয়নের দক্ষিণ তেওতা গ্রামের মো. ফজলাল মোল্লার স্ত্রী কোহিনুর বেগম (৪৫) গত বৃহস্পতিবার বিকেলে পিত্তথলির পাথর অপারেশনের জন্য বাসস্ট্যান্ডে অবস্থিত চাদের হাসি হাসপাতালে ভর্তি হন। অপারেশনটি করেন মানিকগঞ্জ ২৫০ শয্যা হাসপাতালের জুনিয়র কনসালটেন্ট (সার্জারি) ডা. ফেরদৌস রায়হান। এনেস্থেসিয়া দেন সিংগাইর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জুনিয়র কনসালটেন্ট ডা. রাজিবুল ইসলাম।
অপারেশনের পর গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় কোহিনুর বেগমকে অপারেশন থিয়েটার থেকে বের করা হয়। চিকিৎসকেরা দ্রুত সাভার সুপার হাসপাতালে নেওয়ার পরামর্শ দেন। সেখানে একদিন আইসিইউতে রেখে পরের দিন ঢাকার ধানমণ্ডির একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাকে। অবশেষে রবিবার রাত ৮টায় তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
স্বামী ফজলাল মোল্লা অভিযোগ করে বলেন, “অপারেশন থিয়েটার থেকে বের করার সময়ই বুঝেছিলাম স্ত্রীর অবস্থা খুবই খারাপ। পরে সুপার হাসপাতাল ও ঢাকায় নেওয়ার পরও তাকে বাঁচানো গেল না।
ছেলে ইমন ইসলাম বলেন, “এখানে অবশ্যই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও চিকিৎসকদের গাফিলতি আছে। তাদের কারণেই আমার মায়ের মৃত্যু হয়েছে। আমি এর বিচার চাই।
তবে দায়িত্বরত চিকিৎসক ডা. ফেরদৌস রায়হান বলেন, “সব কিছু ঠিকঠাক দেখেই অপারেশন করেছি। কিভাবে কী হলো তা স্পষ্ট নয়।” অন্যদিকে এনেস্থেসিয়া প্রদানকারী ডা. রাজিবুল ইসলাম দাবি করেন, “অপারেশনের পর রোগী তাকিয়ে ছিলেন। সম্ভবত হঠাৎ হার্ট অ্যাটাক করেছিলেন।
চাদের হাসি হাসপাতালে গিয়ে চেয়ারম্যান মো. হারুনকে পাওয়া যায়নি। মোবাইলে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তার কোনো বক্তব্য মেলেনি।
এ বিষয়ে মানিকগঞ্জের সিভিল সার্জন ডা. খুরশীদ আলম বলেন, “এ বিষয়ে আমাকে কেউ কিছু জানায়নি। খোঁজ নিয়ে দেখছি।” ক্রমাগত এ ধরনের মৃত্যুর ঘটনায় সাধারণ রোগী ও তাদের স্বজনদের মধ্যে চরম আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে।