দোহার ( ঢাকা) প্রতিনিধি. গনঅভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা পতনের পর দোহারে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান,পৌর মেয়র,ইউপি চেয়ারম্যান ও পৌর কাউন্সিলরসহ আওয়ামীলীগ ও সহযোগী সংগঠনের বেশিরভাগ নেতৃবৃন্দরা আত্মগোপনে রয়েছেন বলে জানা যায়।
এছাড়াও উপজেলা ও পৌরসভার বেশিরভাগ জনপ্রতিনিধিগনের মোবাইল ফোনও বন্ধ রয়েছেন। ফলে এ অঞ্চলের উন্নয়নমূলক কাজ,ট্রেড লাইসেন্স,জন্ম-নিবন্ধন, ওয়ারিশ সনদ ও মৃত্য সনদসহ বিভিন্ন নাগরিক সেবাদান বন্ধ রয়েছে।
ঢাকা-১ আসনে সংসদ সদস্য ছিলেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাবেক বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্ঠা সালমান এফ রহমান(দরবেশ খ্যাত)। এখানে নবাবগঞ্জ উপজেলায় ১টি উপজেলা চেয়ারম্যান,মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান,পুরুষ ভাইস চেয়ারম্যানসহ ১৪ টি ইউপি চেয়ারম্যান রয়েছে।দোহার উপজেলায় ১টি উপজেলা চেয়ারম্যান,মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান,পুরুষ ভাইস চেয়ারম্যানসহ আরও ৮টি ইউপি চেয়ারম্যান রয়েছে।এছাড়াও দোহারে ১টি প্রথম শ্রেণীর পৌরসভা রয়েছে। পৌরসভা মেয়র সহ ১২টি কাউন্সিলর রয়েছে। এরা সবাই সালমান এফ রহমান(দরবেশ খ্যাত) তার বদৌলতে ইভিএম দ্বারা বিনা ভোটে আওয়ামীলীগের জনপ্রতিনিধি হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন বলে অভিযোগ বিভিন্ন মহলের। ফলে সবাই আওয়ামীলীগের পন্থী। সরকার পতনের আগে ৫ আগষ্ট বেশির ভাগ জনপ্রতিনিধিগন দোহারে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনরত ছাত্র-জনতার উপর অতর্কিত হামলা চালিয়ে শিক্ষার্থীসহ অন্তত: মোট ৬৪ জনকে আহত করার ঘটনার ঘটেছে। শেখ হাসিনার সরকারের পতনের সংবাদ পেয়ে গা-ঢাকা দেন আ’লীগ সমর্থিত উপজেলা চেয়ারম্যান,মেয়র ও ইউপি চেয়ারম্যানরা। এতে উপজেলা/পৌরসভা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে সকল সেবা কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়ে। আত্মগোপনে চলে যান সকল জনপ্রতিনিধিগন। অনেকের মোবাইল ফোনও বন্ধ পাওয়া যায়। এর মধ্যে দুই/এক জন কাউন্সিলর ও ইউপি. সদস্য এর উপস্থিতির খবর পাওয়া যায়।
অপরদিকে গনঅভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার পতনের পর বিএনপি,ছাত্র-জনতার সবাই মিলে দোহার উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ও ঢাকা জেলা দক্ষিন ছাত্রলীগের সভাপতি গিয়াস উদ্দিন সোহাগের বাড়িঘরে হামলা চালিয়ে ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করেন।এছাড়াও পৌর মেয়র আলমাছ উদ্দিনের কার্যালয়, উপজেলা পরিষদের কার্যালয়, পৌরসভা আওয়ামীলীগের যুগ্ন-আহবায়ক ও জয়পাড়া বনিক সমিতির নেতা দেলোয়ার হোসেন মাঝিসহ অর্ধশতাধিক বাড়িঘরে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নি সংযোগের ঘটনা ঘটেছে। ভুক্তভোগীদের দাবি বিএনপির লোকজন এঘটনা ঘটিয়েছে। এদিকে বিএনপির শীর্ষনেতারা হুশিয়ারি দিয়েছেন কোন কর্মী যেন সহিংশতায় না যান। এছাড়াও সারা দেশের ন্যায় দোহার থানা ও ২টি পুলিশি তদন্ত কেন্দ্রের পুলিশ সদস্যরা রাতের আধারে গা-ঢাকা দেন।
পরবর্তীতে গত ১০ আগষ্ঠ দেশে চলমান প্রেক্ষাপটে বিরাজমান উদ্ভুত পরিস্থিতি থেকে পরিত্রান পেতে সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপে দোহারের পরিস্থিতি শান্ত হয়।
সেনাবাহিনী গত রোববার (১১ আগস্ট) উপজেলা প্রশাসনকে নিয়ে থানা এলাকা ও উপজেলার বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ,শিক্ষক মন্ডলী,সাংবাদিক ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃবৃন্দের সাথে আইনশৃঙ্খলা উন্নয়নে আলোচনা করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনেন।
দোহার ও নবাবগঞ্জ উপজেলার দায়িত্বে থাকা বিগ্রেড কমান্ডার মেজর সায়েম আহম্মেদ,মেজর ইফতেখার ও ক্যাপ্টেন মোহাম্মদ তার সেনা ফৌজের সহযোগিতায় বিরাজমান উদ্ভুত পরিস্থিতি শান্ত হয়। গতকাল সোমবার সকাল থেকেই দোহারের সকল পুলিশ সদস্যরা যোগদান করলে পরিস্থিতি আরও স্বাভাবিক হয়ে উঠে।
এ বিষয়ে দোহার উপজেলা প্রশাসনের নির্বাহী কর্মকর্তা মো.জাকির হোসেন বলেন, উর্ধত্বন কতৃপক্ষ আমাদের কাছে মাঠ পর্যায়ের তথ্য চেয়েছেন। তারা আরও নির্দেশ দিয়েছেন যে, নাগরিক সেবা ও উন্নয়ন কাজ চলমান রাখতে প্যানেল চেয়ারম্যান ও প্যানেল মেয়রের অথবা প্রশাসক নিয়োগ দেবে সরকার।