নিজস্ব প্রতিনিধি.
কোন প্রকার সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ছাড়া ঢাকা বিমানবন্দরসহ দেশের কয়েকটি বিমানবন্দরের অভ্যন্তরে পরিচিত ১৬টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এক দিনের নোটিশে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের এক দিনের নোটিশে এসব প্রতিষ্ঠানের ইজারা বাতিল করা হয়।
রোববার (২৯ জুন) হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরসহ দেশের তিনটি গুরুত্বপূর্ণ বিমানবন্দরে ইজারায় পরিচালিত ১৬টি বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম বন্ধ করা হয়।
কোনো প্রকার নিয়মনীতি ও সরকারের সঙ্গে থাকা চুক্তির তোয়াক্কা না করে এমন আচরণ করা হয়েছে দেশের প্রধান প্রধান বিমানবন্দরগুলোতে। ফলে ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পাশাপাশি যাত্রীরাও আছেন ভোগান্তিতে।
বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের সহকারী পরিচালক আক্তার হোসেনের স্বাক্ষরিত চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে ৩০ জুন প্রতিষ্ঠানগুলো সিলগালা করা হয়। বেবিচক নির্ধারিত নিয়মাবলি অনুযায়ী ইজারা নবায়নের আবেদন করা সত্ত্বেও ইজারার নির্ধারিত মেয়াদ শেষে নতুন অর্থবছরে (২০২৫-২৬) এসব প্রতিষ্ঠানের ইজারা নবায়ন না করারও সিদ্ধান্ত নিয়েছে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ-বেবিচক।
এক দিনের নোটিশে প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ হওয়ায় সরকারের কোটি কোটি টাকা রাজস্ব হারাচ্ছে এবং প্রতিষ্ঠান সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিগণ ও কর্মকর্তা কর্মচারীরা বেকার হয়ে পড়েছে।
সূত্র জানায়, হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের অভ্যন্তরে ১৬/১৭ বছর যাবৎ বেশ কিছু স্বনামধন্য ব্যবসা প্রতিষ্ঠান যাত্রী সেবামূলক বিভিন্ন ব্যবসায়িক কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছিল যার ইজারার মেয়াদ ছিল চলতি বছরের ৩০ জুন পর্যন্ত। বেবিচকের নিয়মনুযায়ী প্রতিষ্ঠানের সব ইজারা, ভ্যাট-আয়কর, বিদ্যুৎ বিলসহ সম্পূর্ণ পাওনা পরিশোধ থাকা সত্ত্বেও এসব প্রতিষ্ঠানকে পুনরায় নবাবয়ন না দিয়ে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ ২০২৫ সালের ২৯ জুন রেজিস্টার্ড ডাকযোগে চিঠি দিয়ে ৩০ জুন রাত ১২ টায় প্রতিষ্ঠান গুলো সিলগালা করে দেয়। কিন্তু বেবিচকের সঙ্গে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোর চুক্তিতে উল্লেখ আছে তাদের ইজার বাতিল করতে হলে তিন মাস আগে নোটিশ করতে হবে।
বেবিচকের এমন সিদ্ধান্তে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা জানান, পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত সিভিল এভিয়েশনের একজন কর্মকর্তা এখন সাধু সাজার চেষ্টা করছেন। শেখ হাসিনার ভাই শেখ হেলালের প্রভাব খাটানোয় নিজের অতীত ঢাকতে ব্যস্ত। ইতোমধ্যে তিনি বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের পরিচালনা ও পরিকল্পনার সদস্য পদের মতো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পদও বাগিয়ে নিয়েছেন।
হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের-এরোস ট্রেডিং, মেসার্স সজল এন্টারপ্রাইজ, মেসার্স মাহবুবা ট্রেডার্স, নাহার কনস্ট্রাকশন, এভিয়েশন ট্রান্সপোর্ট লি., এ ফাইভ রোডওয়ে লি., ওয়ার্ল্ড ট্রাস্ট ট্যুরিস্ট কার সার্ভিসেস কোং, শিরিন এন্টারপ্রাইজ, মেসার্স হাওলাদার অ্যান্ড সন্স, মেসার্স অথৈ এন্টারপ্রাইজ, ওলফ করপোরেশন, আড়িয়াল ক্রিয়েটিভ স্পেস, ধানসিঁড়ি কমিউনিকেশন এবং ডিপার্টমেন্ট এস কনসালটিং এর ইজারা বাতিলের সিদ্ধান্ত নেয় বেবিচক।
এ ছাড়াও এই তালিকায় আছে চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ফ্যালকন এজেন্সি এবং সৈয়দপুর বিমানবন্দরের ফ্যালকন এয়ারপোর্ট সার্ভিস টিম। যার ফলে কোটি টাকা রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সরকার, ব্যবসায়ীগণ আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
এ বিষয়ে বেবিচকের অপারেশন অ্যান্ড প্ল্যানিং-এর সদস্য আবু সায়েদ মেহবুব খান (বিএসপি, বিইউপি, এনডিসি, পিসসি)-এর সঙ্গে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।