দেওয়ান আবুল বাশার, মানিকগঞ্জ:
বগুড়ার শেরপুরের একটি প্রাইভেট ক্লিনিকে জরায়ুর টিউমার অপারেশনের দেড় বছর পর মানিকগঞ্জের এক রোগীর পেট থেকে সার্জারির সময় ফেলে রাখা মপ (অস্ত্রোপচারে ব্যবহৃত শোষণক্ষম কাপড়) বের করেছেন মানিকগঞ্জ জেলা সদর হাসপাতালের সার্জারি বিশেষজ্ঞ ডাক্তার মোহাম্মদ আরিফুর রহমান। ভুক্তভোগী রোগীর নাম রুবি বেগম (৫০)। তিনি মানিকগঞ্জের হরিরামপুর উপজেলার সুতালড়ি ইউনিয়নের রফিকুল ইসলামের স্ত্রী।
ভুক্তভোগী পরিবার জানায়, অপারেশনের কিছুদিন পর থেকেই রুবি বেগম অসুস্থ হতে থাকেন। চিকিৎসকরা তার ‘টিবি রোগ’ হয়েছে বলে জানান। দীর্ঘ নয় মাস ধরে তিনি সেই রোগের চিকিৎসা নেন। কিন্তু অবস্থার কোনো উন্নতি হয়নি। বরং তার পেটের ডান পাশের নিচের দিক থেকে একটি নালা দিয়ে ধীরে ধীরে পুঁজ বের হতে থাকে।
এ অবস্থায় তার দেবর শহিদুল ইসলাম তাকে মানিকগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেলা সদর হাসপাতালের সার্জারি বিশেষজ্ঞ ডাক্তার মোহাম্মদ আরিফুর রহমানের শরণাপন্ন হন। পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর তিনি গত মঙ্গলবার রাতে মানিকগঞ্জ বাসস্ট্যান্ড এলাকার মেডিল্যাব জেনারেল হাসপাতালে রুবির পুনরায় অস্ত্রোপচারের সিদ্ধান্ত নেন। অপারেশনের সময় ডা. আরিফুর রহমান রোগীর শরীরের ভেতরে ফেলে রাখা একটি মপ খুঁজে পান। পরে তা বের করে আনা হয়।
ডা. আরিফুর রহমান বলেন, “রোগী যখন আমার কাছে আসে তখন তার পেট থেকে পুঁজ বের হচ্ছিল। পরীক্ষার পর অপারেশনের সিদ্ধান্ত নেই। অস্ত্রোপচারের সময় দেখা যায়, দেড় বছর আগে অপারেশনের সময়কার একটি মপ শরীরের ভেতরে থেকে গেছে। এই কারণেই রোগী এতদিন ধরে ভুগছিলেন।
রুবির ছেলে ঈসমাইল বলেন, “দেড় বছর আগে অপারেশন করানোর পরও মায়ের ব্যথা কমেনি। এবার মানিকগঞ্জে ডাক্তার আরিফ স্যার অপারেশন করে মায়ের পেট থেকে ত্যানা (মপ) বের করেছেন। আমি ওই চিকিৎসকের বিচার চাই।
স্থানীয়রা জানান, চিকিৎসক আরিফুর রহমানের উদ্যোগ ও দক্ষতাতেই দীর্ঘদিনের ভোগান্তির অবসান ঘটেছে। তবে বগুড়ার সেই চিকিৎসকের অবহেলা ও দায়িত্বজ্ঞানহীনতার কারণে রোগী ও পরিবারের জীবনে যে ভোগান্তি নেমে এসেছে তার কঠোর জবাবদিহিতা হওয়া প্রয়োজন।