1. info@asiabarta.news : এশিয়া বার্তা :
ছাত্রদল নেতা পাভেলের নেতৃত্বে রেলওয়ে প্রকল্পের প্রায় ৮০ কোটি টাকার লোহা চুরির অভিযোগ - এশিয়া বার্তা
শনিবার, ২৫ অক্টোবর ২০২৫, ১১:৩৭ পূর্বাহ্ন
ঘোষণা:
জরুরী নিয়োগ চলছে দেশের প্রতিটি বিভাগীয় প্রতিনিধি, জেলা,উপজেলা, স্টাফ রিপোর্টার, বিশেষ প্রতিনিধি,নিয়োগ চলছে। আগ্রহীরা যোগাযোগ করুন: বার্তা বিভাগ-০১৭১৬৫৫৯১৯০
প্রধান খবর:
ছাত্রদল নেতা পাভেলের নেতৃত্বে রেলওয়ে প্রকল্পের প্রায় ৮০ কোটি টাকার লোহা চুরির অভিযোগ মাদ্রাসার ৫ শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগে নবাবগঞ্জে শিক্ষকের বিরুদ্ধে মামলা দোহারে ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থীর নির্বাচনী গণসংযোগ টাকা নিয়ে আসামি ছাড়ার অভিযোগে এসআই সহ ১০ সদস্যকে আটকে রাখলেন গ্রামবাসী সংবাদ প্রকাশের পর পরিচালকের বিরুদ্ধে তদন্তের নির্দেশ দোহারে ট্রাফিক পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগ মানিকগঞ্জে ২৪ ঘণ্টায় ৫ মরদেহের উদ্ধার দোহারে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থীর নির্বাচনী গনসংযোগ দোহারে সরকারি জমি দখলের অভিযোগ সাড়া দেশে এখনো বিএনপির নামে ষড়যন্ত্র হচ্ছে-খন্দকার আবু আশফাক

ছাত্রদল নেতা পাভেলের নেতৃত্বে রেলওয়ে প্রকল্পের প্রায় ৮০ কোটি টাকার লোহা চুরির অভিযোগ

  • প্রকাশিত: শনিবার, ২৫ অক্টোবর, ২০২৫
  • ১ বার পড়া হয়েছে

অনলাইন ডেস্ক:
পদ্মা সেতুর ওপর দিয়ে ঢাকা থেকে যশোর পর্যন্ত রেললাইন নির্মাণ প্রকল্পের লোহা ও সরঞ্জামাদি চুরি করে বিক্রি করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। গত এক বছরে ৭০-৮০ কোটি টাকার লোহা বিক্রির তথ্য পাওয়া গেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ঢাকা জেলা দক্ষিণ ছাত্রদলের সভাপতি পাভেল মোল্লার নেতৃত্বে বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের কয়েকজন নেতাকর্মী, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কিছু সদস্য এবং চায়না প্রকল্পের নিরাপত্তাকর্মীদের যোগসাজশে এ চুরি চলছে। কেরানীগঞ্জে এ প্রকল্পের সাইট অফিস অবস্থিত।
রেলপথ মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, পদ্মা সেতুর ওপর দিয়ে রেললাইন স্থাপন প্রকল্পটি বাংলাদেশ সরকার ও চীনের মধ্যে জিটুজি (সরকারের সঙ্গে সরকার) চুক্তির আওতায় পরিচালিত হচ্ছে। এ প্রকল্পের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চীনের চায়না রেলওয়ে ইঞ্জিনিয়ারিং গ্রুপ (সিআরইসি)। প্রকল্পের আওতায় রয়েছে ঢাকা থেকে যশোর পর্যন্ত ১৭২ কিলোমিটার মূল ব্রডগেজ রেললাইন স্থাপন। কাজ শেষ হলে ঢাকা থেকে নারায়ণগঞ্জ, মুন্সীগঞ্জ, শরীয়তপুর, মাদারীপুর, ফরিদপুর, গোপালগঞ্জ ও নড়াইল হয়ে রেললাইন যশোরে পৌঁছানোর কথা রয়েছে। মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৩৯ হাজার ২৪৭ কোটি টাকা, যার মধ্যে বাংলাদেশ সরকার দিচ্ছে ১৮ হাজার ২১০ কোটি এবং বাকি ২১ হাজার ৩৬ কোটি টাকা অর্থায়ন করছে চীনের এক্সিম ব্যাংক।
ছয় বছর মেয়াদি প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০২৪ সালে। তবে গত বছরের ৫ আগস্টের পর থেকে রেললাইন সংযোগের কাজ বন্ধ রয়েছে। ফলে প্রকল্প বাস্তবায়নে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। কাজ বন্ধ থাকায় প্রকল্প এলাকার বিশাল অংশে পড়ে থাকা লোহা ও অন্যান্য সরঞ্জাম নিয়মিতভাবে চুরি হচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
কেরানীগঞ্জ উপজেলার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের কাজীরগাঁও নামক স্থানে রয়েছে সিআরইসির অফিস। বিশাল এলাকাজুড়ে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তাবেষ্টনীর ভেতরে চলে অফিসের কার্যক্রম।
এলাকাবাসী জানান, গত বছর আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর রাজনৈতিক অস্থিরতার সুযোগে রাতের আঁধারে চুরি হয়ে যাচ্ছে পদ্মা সেতু রেলওয়ে প্রকল্পের লোহালক্কড়। প্রতিদিন তিন থেকে পাঁচ ট্রাকভর্তি লোহা বিক্রি করা হয়। প্রতি ট্রাকের ধারণক্ষমতা ১৫ থেকে ২০ টন। প্রতিদিন ৩০-৪০ জন শ্রমিক পদ্মা সেতু রেললাইনের লোহা গ্যাসের মাধ্যমে কেটে টুকরা করে কোন্ডা ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাজীরগাঁও এলাকায় লিটন ও সজীবের বাড়ির সামনে জমা করে। এরপর দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানা পুলিশের নীরব সমর্থন নিয়ে এখান থেকে লোহাভর্তি ট্রাক পাঠানো হয় পোস্তগোলা শ্মশানঘাট চৌধুরী মার্কেটের নয়ন শেখ ও তার বাবা স্বপন শেখের মালিকানাধীন এনএস ট্রেডার্সে। এর গোডাউন ও দোকানের সামনে-পেছনে এবং আশপাশে পদ্মা সেতু রেলওয়ে প্রকল্পের লোহালক্কড় মজুদ করে রাখার চিত্র দেখা গেছে।
এ ব্যাপারে দোকানে থাকা কর্মচারীরা কোনো তথ্য দিতে রাজি হয়নি। পরে লোহা বিক্রেতা সেজে দোকান মালিক নয়ন শেখের মোবাইলে ফোন দিলে তিনি হোয়াটসঅ্যাপে লোহার স্যাম্পল পাঠাতে বলেন। তখন চায়না ইঞ্জিনিয়ারিং প্রজেক্ট থেকে তোলা লোহার ছবি তার হোয়াটসঅ্যাপে পাঠানো হয়। এরপর নয়ন শেখ জানান, পদ্মা সেতু রেলওয়ের লোহা তিনি প্রতি কেজি ৫৫ থেকে ৬০ টাকা দরে কিনে থাকেন।
তার দেওয়া তথ্যানুযায়ী প্রতি ট্রাকে ১০ থেকে ১৫ টন লোহা থাকে। প্রতি ট্রাক লোহার সর্বনিম্ন মূল্য সাত-আট লাখ টাকা। প্রতিদিন গড়ে তিন ট্রাক লোহা বিক্রি হওয়ায় মাসে প্রায় ছয়-সাত কোটি টাকার লোহা পাচার হচ্ছে। এভাবে গত এক বছরে ৭০-৮০ কোটি টাকার মালামাল চোরাই পথে বিক্রি করা হয়েছে মর্মে সুনির্দিষ্ট তথ্য পাওয়া গেছে। জানা গেছে, কঠোর নিরাপত্তাব্যবস্থা সত্ত্বেও দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের চায়না ইঞ্জিনিয়ারিং প্রজেক্ট থেকে লোহা সরানোর পুরো প্রক্রিয়াটি সুচারুভাবে পরিচালিত হয়। অভিযোগ রয়েছে, প্রকল্পটির দোভাষী ও নিরাপত্তা ইনচার্জকে ম্যানেজ করেই এসব লোহা প্রকল্প এলাকা থেকে বের করা বা চুরি করে আনা হয়।
চুরির মূল দায়িত্বে আছেন কাজীরগাঁও গ্রামের লিটন ও সজীব। তাদের নেতৃত্বে স্থানীয় ফরিদ দেওয়ান, ফয়সাল, রিয়াদ, রানা, আশিক, ব্রাহ্মণগাঁওয়ের সজীব ও জুয়েলসহ অনেকে এতে জড়িত বলে জানা গেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ঢাকা জেলা দক্ষিণ ছাত্রদলের সভাপতি পাভেল মোল্লার নেতৃত্বে থানা ছাত্রদলের সদস্য সচিব জুয়েল, যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক অয়ন ইসলাম রনি, ইউনিয়ন যুবদলের সাধারণ সম্পাদক জাকির দেওয়ান, থানা শ্রমিক দলের নেতা সোবাহান, ইউনিয়ন বিএনপির সিনিয়র সহসভাপতি সেলিম, থানা স্বেচ্ছাসেবক দলের সহসভাপতি উজ্জ্বল মোল্লাসহ বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের বিভিন্ন নেতাকর্মী লোহা বিক্রির টাকা থেকে ভাগ পান।
দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের প্রভাবশালী এক নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, পদ্মা সেতু রেলওয়ে প্রকল্পের মালামাল চুরি হয়, এটা আমি জানতাম। বিষয়টি জানতে পেরে বাধা দিয়েছিলাম, এমনকি লোহাভর্তি গাড়িও আটক করি। পরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যসহ অনেক সিনিয়র নেতা আমাকে ফোন করেন। তার দাবি, পাভেল মোল্লার মাধ্যমে দলের সিনিয়র নেতাদের পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কিছু সদস্যও এই চুরির টাকার ভাগ পান।
এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে ঢাকা জেলা দক্ষিণ ছাত্রদলের সভাপতি পাভেল মোল্লা ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেখান এবং অশালীন ভাষায় প্রতিবাদ করে নিজেকে নির্দোষ দাবি করেন। স্থানীয়দের অভিযোগ, এমন পরিস্থিতিতে তিনি প্রায়ই এভাবে গালিগালাজ করে বিষয়টি এড়িয়ে যান। এলাকাবাসীর মতে, কেরানীগঞ্জে এমন কোনো অপরাধ নেই, যাতে পাভেল মোল্লার সংশ্লিষ্টতা নেই।
দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার ওসি সৈয়দ আখতার হোসেন এ ব্যাপারে জানান, তিন মাস আগে তিনি থানায় যোগ দিয়েছেন। এর পর লোহা চুরির বিষয়টি তার নজরে আসে। প্রতিদিনই চুরি হয়। কখনো কখনো দিনে ১০-১২ ট্রাক পর্যন্ত লোহা বের হয় বলে তিনি তথ্য পান। পরে সেনাসদস্যদের সঙ্গে আলোচনা করে কিছু জায়গায় সিসি ক্যামেরা বসানো হয়।
ওসি দাবি করেন, তার থানার কোনো পুলিশ সদস্য এ চোরচক্রের নিরাপত্তা দিচ্ছে না।
ঢাকা জেলা দক্ষিণ ডিবির ওসি সাইদুল ইসলাম চুরির বিষয়টির সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ২০২৪ সালের এপ্রিলে দুই ট্রাক চুরি হওয়া লোহাসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানায় এ ঘটনায় দায়ের করা মামলায় আসামিরা হলেন—লিটন, সজীব, উলফাত রানা, মো. ফজলুল হক ও আশিক দেওয়ান। বর্তমানে তারা জামিনে আছেন। মামলার বাদী ছিলেন চায়না ইঞ্জিনিয়ারিং প্রজেক্ট লিমিটেডের তৎকালীন সিকিউরিটি ইনচার্জ সাকানুর হাসান।
এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে সাকানুর হাসান জানান, তিনি বর্তমানে চাকরিতে নেই। ঘটনার পর প্রকল্প কর্তৃপক্ষ পুরো সিকিউরিটি টিম পরিবর্তন করেছে। বর্তমানে নাজমুল হুদা খান প্রকল্পের সিকিউরিটি ইনচার্জ হিসেবে দায়িত্বে আছেন।
নাজমুল হুদা খান এ ব্যাপারে জানান, ঢাকা জেলা দক্ষিণ ছাত্রদলের সভাপতি পাভেল মোল্লাসহ স্থানীয় বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের প্রায় ২৫-৩০ জন নেতাকর্মী এ চুরির সঙ্গে জড়িত। তিনি বলেন, আমি প্রায়ই অজ্ঞাত ফোনে প্রাণনাশের হুমকি পাই। আমি গরিব মানুষ, এই চাকরিতেই সংসার চলে। তাই ভয়ে চুপ থাকি।

 

 

তথ্য সূত্র: আমার দেশ।

সংবাদটি শেয়ার করুন

Shares
আরো সংবাদ পড়ুন

আর্কাইভ | পুরাতন সংবাদ পড়ুন

Mon Tue Wed Thu Fri Sat Sun
 12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
2728293031  

© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
প্রযুক্তি সহায়তায়: 𝐘𝐄𝐋𝐋𝐎𝐖 𝐇𝐎𝐒𝐓