কেরানীগঞ্জ (ঢাকা) প্রতিনিধি
ঢাকার কেরানীগঞ্জে চাঞ্চল্যকর রাসেল হত্যাকাণ্ডের ৫দিন পেরিয়ে গেলেও মামলার কোন আসামীকে থানা পুলিশ এখনো গ্রেফতার করতে না পারায় ভুক্তভোগী পরিবারসহ বিভিন্ন মহলে চরম ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। এদিকে আসামিপক্ষের লোকজন মামলাটি প্রত্যাহার করে নেওয়ার জন্য মামলার বাদী সহ নিহতের পরিবারকে নানাভাবে হুমকি-ধুমকি দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। মামলার প্রধান আসামি আফতাব হোসেন রাব্বির বাবা বাসের উদ্দিন শুভাঢ্যা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও একজন প্রভাবশালী লোক হওয়ায় নিহত রাসেলের পরিবার এখন চরম আতঙ্কের মধ্যে রয়েছে। নিহত রাসেলের ছোট ভাই মো: হৃদয় হোসেন জানান, মামলার প্রধান আসামি রাব্বিসহ অন্যান্য আসামীরা প্রভাবশালী ও ক্ষমতাসীন দলের হাওয়ায় নিত্যদিন তাদের আত্মীয়-স্বজনরা তাদের পরিবারের সবাইকে মামলা প্রত্যাহারের জন্য হুমকি-ধুমকি দিচ্ছে। এমনকি মামলাটি প্রত্যাহার না করা হলে তারা তাদেরকে জীবননাশের হুমকি পর্যন্ত দিচ্ছে। এ অবস্থায় তারা এখন বাসার বাহিরে যেতে পারছে না। এসব ঘটনা থানা পুলিশকে অবহিত করলেও তারা কোন পদক্ষেপ নিচ্ছেন না। এছাড়া তার ভাইকে হত্যার পর রাব্বি তার লোকজনের মাধ্যমে ভাইয়ের বাসায় তার ভাবীর নিকট থেকে ব্যাংকের চেক ও জমির দলিলসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র নিয়ে গেলেও সেগুলি উদ্ধারের কোন চেষ্টা করছেনা পুলিশ। নিহত রাসেলের স্ত্রী সুমি বেগম জানান, মামলার আসামিরা ক্ষমতাসীন দলের প্রভাবশালী লোক ও অঢেল অর্থ বৃত্তের মালিক হওয়ায় তারা প্রতিনিয়ত তাদেরকে হুমকি দিচ্ছেন এবং অর্থের লোভ দেখাচ্ছেন। এমতাবস্থায় আমরা চরম আতঙ্কের মধ্যে রয়েছি। এদিকে গত ১২ জানুয়ারি আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির দপ্তর সম্পাদক আজিজুল হক আজিজ স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে আফতাব হোসেন রাব্বিকে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাংগঠনিক পদ থেকে বহিষ্কার করেন। উল্লেখ্য ৯জনুয়ারি রাতে বাসা থেকে ডেকে নিয়ে তৈল ঘাট এলাকায় রাব্বির ক্লাবে রাতভর পৈশাচিক নির্যাতন করে রাসেলকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। এই ঘটনায় রাসেলের বাবা বীর মুক্তিযোদ্ধা তোফাজ্জল হাওলাদার বুধবার রাতে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানায় বাদী হয়ে রাব্বিকে প্রধান আসামি করে ১৩ জনের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এই মামলায় আরো ১২-১৩ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়। অপরদিকে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মাহবুব আলম জানান, আসামিদের গ্রেফতারের জন্য একাধিক টিম বিভিন্ন জায়গায় অভিযান পরিচালনা করছে। আমরা দ্রুত তাদের গ্রেফতারের চেষ্টা চালাচ্ছি।